মসলিন উইকিপিডিয়া

 


লস এঞ্জেলেস কাউন্টি মিউজিয়াম অব আর্টে প্রদর্শিত আনুমানিক ১৮৫৫ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপীয় রমণীর জন্যে মসলিনের তৈরী পোষাক

মসলিন বিশেষ এক প্রকার তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুতকৃত সূতা দিয়ে বয়ন করা এক প্রকারের অতি সূক্ষ্ম কাপড়বিশেষ। এটি ঢাকাই মসলিন নামেও সুবিদিত। ফুটি কার্পাস নামক তুলা থেকে প্রস্তুত অতি চিকন সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি করা হত। চড়কা দিয়ে কাটা, হাতে বোনা মসলিনের জন্য সর্বনিম্ন ৩০০ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হত যার ফলে মসলিন হত কাচের মত স্বচ্ছ। এই মসলিন রাজকীয় পোশাক নির্মাণে ব্যবহার করা হত। মসলিন প্রায় ২৮ রকম হত যার মধ্যে জামদানী এখনও ব্যাপক আকারে প্রচলিত। নানা কারণে আঠারো শতকের শেষার্ধে বাংলায় মসলিন বয়ন বন্ধ হয়ে যায়।

শব্দের উৎস

বাংলা মসলিন শব্দটি আরবি, ফার্সি কিংবা সংস্কৃতমূল শব্দ নয়। এস. সি. বার্নেল ও হেনরি ইউল নামের দুজন ইংরেজ কর্তৃক প্রকাশিত অভিধান 'হবসন জবসন'-এ উল্লেখ করা হয়েছে মসলিন শব্দটি এসেছে 'মসুল' থেকে। ইরাকের এক বিখ্যাত ব্যবসাকেন্দ্র হল মসুল[১][২] এই মসুলেও অতি সূক্ষ্ম কাপড় প্রস্তুত হত। এই 'মসুল' এবং 'সূক্ষ কাপড়' -এ দুয়ের যোগসূত্র মিলিয়ে ইংরেজরা অতিসূক্ষ্ম কাপড়ের নাম দেয় 'মসলিন'।[৩] অবশ্য বাংলার ইতিহাসে 'মসলিন' বলতে বোঝানো হয় তৎকালীন ঢাকা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে উৎপাদিত অতি সূক্ষ্ম এক প্রকার কাপড়কে।

ইতিহাস

ঢাকার ইতিহাস চারশো বছরের বেশি পুরনো নয়। ১৬১০ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় ইসলাম খান চিশতী রাজমহল থেকে ঢাকায় রাজধানী স্থানান্তর করলে ঢাকা ইতিহাসের প্রসিদ্ধতা লাভ করে। কিন্তু ঢাকার ইতিহাস বেশি পুরনো না হলেও মসলিনের ইতিহাস অনেকটাই পুরনো ও দীর্ঘ। স্বরনাতীত বাংলায় এর উল্লেখ পাওয়া যায়।[২][৪] প্রথম খ্রিস্টাব্দের প্রথম শতকেই রোম সাম্রাজ্যের স্বর্ণযুগে অভিজাত রোমান নারীরা ঢাকার মসলিন

Read more »
on Sunday, 14 March 2021 | | A comment?

মসলিন

মসলিন  ‘ঢাকাই মসলিন’ নামে বিশ্বব্যাপী খ্যাত সূতিবস্ত্র। ঢাকা শহর ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় স্থানীয় কারিগরদের দ্বারা স্থানীয়ভাবে উৎপন্ন সুতা থেকে এই মসলিন তৈরি হতো। ‘মসলিন’ শব্দের উৎপত্তির উৎস অস্পষ্ট। কেউ বলেন, মসলিন শব্দটি ইরাকের একটি প্রাচীন ব্যবসাকেন্দ্র মসুল থেকে উদ্ভূত। আবার কেউ কেউ মনে করেন, দক্ষিণ ভারতে ইউরোপীয় বাণিজ্যিক কোম্পানির এককালের সদর দপ্তর মসলিপট্টমের সঙ্গে মসলিন শব্দটি সম্পৃক্ত। মসলিন ফার্সি, সংস্কৃত বা বাংলা শব্দ নয়। সম্ভবত ইউরোপীয়রা মসুল থেকে যেসব বস্ত্র আমদানি করত এবং প্রাচ্যের অপরাপর দেশ থেকে মসুল হয়ে যেসব বস্ত্র আনা হতো তারা তার নাম দেন মসলিন। ঢাকার সূক্ষ্মবস্ত্র দেখে তারা সে বস্ত্রেরও নাম করেন মসলিন। মসলিন নামটি যে ইউরোপীয়দের দেওয়া সে সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই। কেবল ঢাকার সূক্ষ্মবস্ত্রকেই মসলিন বলা  হতো না, গুজরাট, গোলকুন্ডা ও ভারতের অন্যান্য স্থান থেকে ইউরোপীয়দের আমদানিকৃত যে কোন সূতিবস্ত্রকেই মসলিন নামে অভিহিত করা হতো।

বাংলার বস্ত্রশিল্পের ঐতিহ্য বেশ প্রাচীন। এক সময় বাংলার সূতিবস্ত্র রোম ও চীন সাম্রাজ্যে রপ্তানি করা হতো। এর উল্লেখ রয়েছে টলেমির ভূগোলে, Periplus of the Erythraean Sea গ্রন্থে এবং প্রাচীন চীনা পরিব্রাজকদের বর্ণনায়। তবে মুগল আমলে বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর  থেকে ঢাকাই মসলিনের খ্যাতি বেড়ে যায় এবং তা দূর-দূরান্তের বিদেশী ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে। মুগল সম্রাট ও অভিজাতগণ ঢাকার মসলিন শিল্পের প্রসারে পৃষ্ঠপোষকতা করেন। সম্রাট, প্রাদেশিক শাসনকর্তা এবং পদস্থ কর্মকর্তা ও অভিজাতদের ব্যবহারের জন্য প্রচুর পরিমাণে সূক্ষ্মতম মসলিন বস্ত্র সংগ্রহ করা হতো।

মসলিন বুনন

১৮৫১ সালে লন্ডনের বিশাল প্রদর্শনীতে ঢাকাই মসলিন বিশেষ প্রাধান্য পায় এবং বিপুল সংখ্যক দর্শককে মুগ্ধ করে। ব্রিটিশ পত্র-পত্রিকা ঢাকাই মসলিন বস্ত্রের উৎকর্ষ

Read more »

মসলিন কাপড়ের ইতিহাস | History of Muslin fabric.

 

মসলিন বিশেষ এক প্রকার তুলার আঁশ থেকে প্রস্তুতকৃত সূতা দিয়ে বয়ন করা এক প্রকারের অতি সূক্ষ্ম কাপড়বিশেষ। এটি ঢাকাই মসলিন নামেও সুবিদিত। ফুটি কার্পাস নামক তুলা থেকে প্রস্তুত অতি চিকন সুতা দিয়ে মসলিন তৈরি করা হত। চড়কা দিয়ে কাটা, হাতে বোনা মসলিনের জন্য সর্বনিম্ন ৩০০ কাউন্টের সুতা ব্যবহার করা হত যার ফলে মসলিন হত কাচের মত স্বচ্ছ। এই মসলিন রাজকীয় পোশাক নির্মাণে ব্যবহার করা হত। মসলিন প্রায় ২৮ রকম হত যার মধ্যে জামদানী এখনও ব্যাপক আকারে প্রচলিত। নানা কারণে আঠারো শতকের শেষার্ধের দিকে বাংলায় মসলিন উতপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

মসলিন প্রস্তুত করা হত পূর্ব বাংলার সোনারগাঁও অঞ্চলে। কথিত আছে যে মসলিনে তৈরি করা পোশাকসমূহ এতই সুক্ষ্ম ছিল যে ৫০ মিটার দীর্ঘ

Read more »

ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন আবার জনপ্রিয় করতে নতুন উদ্যোগ

 

ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিনের বাজার সীমিত হলেও এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা মন্দ নয়- বলছেন গবেষকরা।
ছবির ক্যাপশান,

ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিনের বাজার সীমিত হলেও এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনা মন্দ নয়- বলছেন গবেষকরা।

ঢাকার ঐতিহ্যের কথা আসলেই মসলিন কাপড়ের নাম সবার আগে আসে। এখন থেকে চার-পাঁচশ বছর আগে ঢাকাই মসলিনের কদর ছিল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।

মসলিনের প্রসঙ্গ উঠলে তার সাথে অনেক গল্পও সামনে আসে। জনশ্রুতি আছে যে একটি মসলিন শাড়িকে দিয়াশলাইয়ের বাক্সে রাখা সম্ভব। যদিও এর স্বপক্ষে কোন প্রমাণ মেলেনা।

দিয়াশলাইয়ের বাক্সে রাখা সম্ভব না হলেও, মসলিনের কাপড়ের সূক্ষ্মতা এবং হালকা আরামদায়কভাব নিয়ে কোন বিতর্ক নেই।

এই মসলিন বিলুপ্ত হয়ছে আজ থেকে অন্তত তিনশ বছর আগে। বিলুপ্ত এই মসলিনকে আবার ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ঢাকায় মাসব্যাপী মসলিন উৎসব শুরু হয়েছে শুক্রবার। দৃক গ্যালারি , আড়ং এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এই মাসব্যাপী উৎসব।

শতশত বছরের পুরনো এই কাপড়কে আয়োজকরা কেন ফিরিয়ে আনতে চাইছেন?

মসলিন বিষয়ে গবেষক এবং দৃক গ্যালারির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম মনে করেন মসলিন শুধু একটি কাপড় নয়, এটিকে দেখতে হবে ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে।

মি: ইসলাম বলেন , “আমরা তো রোজ মোটা চালের ভাত খাই। তাই বলে আমরা তো বাসমতি ফেলে দেইনি। সে হিসেবে একটি স্পেশাল জিনিস ফেলে দেওয়া উচিত না।”

মসলিনের অংশ হিসেবে এখনো পর্যন্ত

Read more »

ঢাকাই মসলিনের পুনর্জন্ম


দেশে বোনা মসলিন।

মসলিন কি কেবলই কাপড়? এই বাংলাদেশের ঐতিহ্যের কথা বললে, ইতিহাসের কথা বললে মসলিনকে বাদ দেওয়ার কোনো উপায়ই যে নেই। তাই তো মসলিনের পুনর্জন্ম ঘটাতে ছয় বছর ধরে লেগে ছিলেন একদল গবেষক। অবশেষে তাঁরা সফলও হয়েছেন। কী বিচিত্র উপায়ে সংগ্রহ করা হলো মিহি মসলিনের উপাদানগুলো, তা একেকটা গল্পই বটে।

ঢাকাই মসলিনের শেষ প্রদর্শনী হয়েছিল লন্ডনে ১৮৫০ সালে। এর ১৭০ বছর পরে বাংলাদেশে আবার বোনা হলো সেই ঐতিহ্যবাহী ঢাকাই মসলিন কাপড়ের শাড়ি। ঠিক সে রকমই, যেমনটি বলা হতো—আংটির ভেতর দিয়ে গলে যায় আস্ত একটি শাড়ি। ইতিমধ্যেই ঢাকাই মসলিনের জিআই স্বত্বের অনুমোদন পাওয়া গেছে। ২৮ ডিসেম্বর এ–সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।

প্রচলিত আছে, মসলিন শিল্পীদের আঙুল কেটে দেওয়ার পরে ঢাকাই মসলিন তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। এখন ভারতেও মসলিন তৈরি হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকাই মসলিনের বিশেষত্বই  আলাদা।

তাই তো ঢাকাই মসলিন তৈরির জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন একদল গবেষক। তাঁদেরই  ছয় বছরের চেষ্টা আর গবেষণা ফল দিয়েছে। তৈরি করা হয়েছে মসলিনের ছয়টি শাড়ি। যার একটি গবেষকেরা প্রধানমন্ত্রীকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন। কিন্তু শুরুতে এক টুকরা ‘অরিজিনাল’ মসলিন কাপড় জোগাতে কলকাতা থেকে লন্ডন পর্যন্ত ছুটতে হয়েছে গবেষকদের। মসলিন বোনার সুতা

Read more »

Translate